মা আয়েশা রা: এর বয়স কত ছিল যখন তিনি বিবাহ করেন ? এবং সহবাস করেন ?
এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমরা কিছু বিষয় আলোচনা করা উচিত বলে আমরা মনে করি ।প্রথমেই এটি জেনে রাখা ভালো যে , মা আয়িশা রা: এর বয়স সমপর্কে ইখতিলাফ রয়েছে । এর কারণ কি ?
এর কারণ হলো , আরবদের স্মৃতিশক্তি ছিল প্রখর , তারা জন্মের সাল বা বয়স , সঠিক ভাবে লিখে রাখতো না । নিজেদের চিন্তার উপরেই অটল ছিল । এটার প্রমান কি ?
আরবদের স্মৃতি শক্তি যে ভালো ছিল তার প্রমান কি?
তার প্রমান হল ,
ইমাম মালিক তিনি বলেন:
তখনকার লোক লিখিত অভ্যস্ত ছিল না , তাহারা সাধারণত মুখস্থ করিতেই অভ্যস্ত ছিলেন । তাহাদের কেহ কোন জিনিষ লিখিয়া লইলেও কেবল মুখস্ত করার উদ্দেশ্যেই লিখিতেন , আর মুখস্থ হইয়া গেলে পর উহাকে মুছিয়া ফেলিতেন ।
প্রমান : হাদীস সংকলনের ইতিহাস , (মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম), খায়রুন প্রকাশনী , পৃষ্ঠা ২২৭
প্রমান ২ : জামেউল বায়ানুল ইলম , খন্ড : ১ , পৃষ্ঠা: ৬৪
আরেকটি প্রমান নিন:-
মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন তাবেয়ী সমপর্কে বলা হয়েছে যে , প্রথমে হাদীস লিখিয়া লইয়া উহা মুখস্ত করা এবং মুখস্থ হওয়ার পর লিখিত জিনিষ বিনষ্ট করাই ছিল তাহাদের কাজ ।
প্রমান : হাদীস সংকলনের ইতিহাস , (মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম), খায়রুন প্রকাশনী , পৃষ্ঠা ২২৭
প্রমান ২: তাবাকাতে ইবনে সা’দ , খন্ড: ৫ পৃষ্ঠা: ১০৯
এছাড়াও ঐতিহাসিক আসাকির মুহাদ্দিস ইসমাইল ইবনে উবায়দা বলেছেন:
আমরা যেভাবে কোরআন মুখস্ত করি , সেভাবে হাদীসকেও মুখস্ত করা আমাদের কর্তব্য ।
প্রমান : হাদীস সংকলনের ইতিহাস , (মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম), খায়রুন প্রকাশনী , পৃষ্ঠা ২২৮
প্রমান ২: তারিখুদ দামেস্ক , খন্ড : ২ , পৃষ্ঠা : ১৬
{{{{{
হাদীস সংকলনের ইতিহাস , পৃষ্ঠা ২২৯
আরও প্রমান পত্র :
তাহযিবুত তাহজিব:
( খন্ড - ৪ পৃষ্ঠা , ১৭৩ )
( খন্ড - ৪ পৃষ্ঠা , ১৭২ )
তারিখুল কাবির লিলবুখারী , পৃষ্ঠা : ৪
}}}}}
{ হাদীস সংকলনের ইতিহাস , পৃষ্ঠা ১০৯
আলহাদীসু ওয়াল মুহাদ্দিসুন ( পৃষ্ঠা , ৪৯ )
তাবেয়ী কাতাদাহ এ বিষয়ে একমত , (যুরকনিী , ৫নং খন্ড , পৃষ্ঠা ৪৯৫)
}
এরকম আরও অনেক প্রমান হাদীস সংকলনের ইতিহাস বইয়ে দেওয়া আছে ।
এখন কেও বলতে পারে , যে , আরবদের স্মৃতি শক্তি প্রখর তাহলে , তো , মা আয়িশা রা: বয়স নিয়ে ইখতিলাফ থাকার কথা নয় ।
এর জবাবে আমি বলতে যায় , সেসময়ের মানুষ , জন্মশন , টুকে রাখা বা মুখস্ত করে রাখা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করতো না । তার বাস্তব প্রমান দেখা যায় , আমাদের বিশ্বনবী সা: এর জন্মসন নিয়েই ইখতিলাফ আছে । এখনকার জামানায় অনেকে জন্মদিন কে কেন্দ্র করে অনেক উতসব , বা অনেক কিছুই করে বা অনুষ্ঠান করে যায় কারণে , জন্মসন , মনে রাখা বা লিখে রাখা অত্যান্ত প্রয়োজনীয় , কিন্তু সেজামানায় এত প্রয়োজন ছিল না ।
আর স্মৃতি শক্তি প্রখর থাকা মানেই কিন্তু এই নয় যে , সে কোন জিনিষ ভুলবে না । এমন টা মনে করা বোকামি । স্মৃতি শক্তি প্রখর থাকা সত্বেও ভুল হতে পারে ।
তার বাস্তব প্রমান সাহাবীদের জামানাতেই আমরা দেখি ।
সাহাবীরা রা: এর কোন হাদীস শোনার পর তা বর্ণনা করতে অত্যান্ত ভয় পেতেন । এবং তারা একটি হাদীস শোনার পর পুনরায় অন্যান্য সাহাবীদের মাঝে তা বলে ভেরিফাই করিয়ে নিতেন ।
প্রমান : হাদীস সংকলনের ইতিহাস , (মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম), খায়রুন প্রকাশনী , পৃষ্ঠা ১৫২
সাহাবীরা তাদের প্রখর স্বরণশক্তি থাকা সত্বেও তারা অত্যান্ত ভয় পেতেন হাদীস বর্ণনা করতে। তাহলে বুজুন , স্বরণশক্তি থাকার মানে কিন্তু এই নয় , যে , তাদের ভুল হবেনা ।
যেমন:
আবু যুবায়র রা: আদৌ কোন হাদীস বর্ণনা করতেন না । একদিন হযরত আব্দুল্লাহ রা: তাহাকে প্রশ্ন করলেন , আপনি অন্যান্য সাহাবীদের মত হাদীস বর্ণনা করেন না কেন ? তিনি বললেন : রাসূলের কথার সাথে যদি আমার কথা মিশ্রত হয় তাহলে আমি জাহান্নামে চলে যাবো । এই ভয়ে আমি হাদীস বর্ণনা করিনা ।
আবু দাউদ , অধ্যায়:- কিতাবুল ইলম
এরকম অনেক সাহাবী হাদীস বর্ণনায় সর্তকতা অবলম্বন করতেন যার প্রমান
প্রমান : হাদীস সংকলনের ইতিহাস , (মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম), খায়রুন প্রকাশনী , পৃষ্ঠা ১৫২ - ১৫৬ পৃষ্ঠা পর্যন্ত অনেক প্রমান বিদ্যামান ।
তাহলে এর দ্বারা প্রমানিত হলো , স্বরনশক্তি থাকা মানে এই নয় , যে ভুল হবেনা । সাহাবীরাও ভুল হওয়ার আশাংকা করতেন এই জন্যই তারা Safe থাকার চেষ্টা করতেন । তবে তার মানে এই নয় যে , তারা , হাদীস বর্ণনা করতে না , ! বিষয়টি এমন , যে হাদীস বর্ণনা করতেন তবে তা অত্যান্ত সাবধানতার সহীত ।
কাজেই এরকম মনে করা মুর্খামি যে , মা আয়িশা এর জন্মবয়স সেসময় , মানুষ লিখে রাখতো , বা , খুব একটা যত্ন নিত জন্ম বয়স লিখার উপরে । সুতরাং , মা আয়িশা , এর নয় বছর বয়সে বিবাহ এর বিষয়টি কে কেন্দ্র করে চুড়ান্ত ভাবে বলা উচিত নয় , যে রাসুল সা: শিশুর সঙ্গে সহবাস করেছেন ।
তো যাইহোক , এবার আমরা মা আয়িমা রা: এর বয়স সমপর্কে ইখতিলাফ , রেওয়ায়েত গুলো দেখবো ।
মুহাম্মাদ সা: যখন মা আয়িশা রা: এর সঙ্গে দৈহিক সমপর্কে লিপ্ত হন , তখন , তার বয়স ছিল ১৭-১৮ বছর :
প্রমান দেখুন :
মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে আয়েশা (রা.)-এর বিয়ের সময় তাঁর বয়স কত ছিল, ইতিহাসবিদদের মধ্যে এ নিয়ে মতানৈক্য দেখা যায়। একদল ইতিহাসবিদের অভিমত হলো, বিয়ের সময় আয়েশা (রা.)-এর বয়স ছিল ১৪ বছর। আর যখন তাঁর সঙ্গে মহানবী (সা.)-এর দৈহিক সম্পর্ক হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল ১৭ থেকে ১৮ বছর। (দেখুন—আরবি পত্রিকা ‘আশ্ শিরকুল আওসাত’ : ৬-৯-২০০৮; আরবি সাহিত্যিক শওকি জইফের গ্রন্থ ‘মুহাম্মদ খাতামুল মুরসালীন’ : পৃষ্ঠা ১৭১)
Live See:>>
এরপর , আরেকটি বর্ণনা এসেছে , এবং বর্ণনা টি সহীহ:
নবী করিম (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের তিন বছর আগে খাদিজা (রা.)-এর ইন্তেকাল হয়। তারপর দুই বছর বা এর কাছাকাছি সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি আয়েশা (রা.)-কে বিয়ে করেন। তখন তিনি ছিলেন ৬ বছরের বালিকা। তারপর ৯ বছর বয়সে বাসর যাপন করেন।’(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৮৯৬) তাহওহিদ প্রকাশনি ,
হাদীস শরিফ থেকে আমরা জানতে পারি আয়িশা রা: কে ৬ বছর বয়সে বিবাহ করা হয় এবং ৯ বছর বয়সে , সহবাস করেন , যেমন হাদীস শরিফে এসেছে :
এখানে আরেকটি কথা উল্লেখ্যযোগ্য মা আয়িশা রা: কে নয় বছর বয়সেই মুহাম্মাদ সা: এর হাতে তুলে দেওয়া হয় তার প্রমান :-
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৮৯৫) তাহওহিদ প্রকাশনি ,
0 Comments